অস্ত্রের নীরবতা
অস্ত্র আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে বহুদিন নীরব
অস্ত্রের নীরবতায় অস্ত্রের গায়ে আমরা পেলাম মরচে
মরচে পড়া অস্ত্র নিয়ে আমরা এবার ঘাস কাটি__
চলো।
ঘাসকাটা কমমোটি বলবে, অস্ত্রের এও এক শিক্ষাদান
আমাদের ঘাস কাটিয়ে কর্মঠ করে
আমরাও কুঁড়ে ছিলাম, কর্মে নিযুক্ত হবো
মরচে পড়া অস্ত্র নিয়ে ঘাস কাটলে দেশেরও উন্নতি
দেশের জঞ্জালও সাফ হয়
অনাথপিণ্ডদ
মাটি বিক্রি করতে গেলে মনে হয়
মাকে বিক্রি করছি
মায়ের চোখ নেই মুখ নেই হাত নেই পা নেই
মা কেবল বুক পেতে দিয়েছে
এক ঝুড়ি মাটির দাম আট আনা
মৃত্যুঞ্জয়: ১৭
ঝড়ের মধ্যে ধুলো হয়ে ঘুরতে ঘুরতে
তুমি এসেছ আমার ভাতের থালায়
আমার সারাদিন উপোস গেল
তবু তুমি এসেছ, বসেছ ভাতের থালায়
এ যে কী আনন্দ আমার
আমি আবার যাব ভিক্ষে করতে
আবার সাজাব ভাতের থালা
আনন্দ
তুমি আমার কাছে চুপি চুপি রেখে যাও
ঢাক-ঢোল
আমার কাছে বাজনার চেয়ে ব্যথা যে অনেক
দেখতে পেয়েও
তুমি আমাকে বলো: বাজাও বাজাও
মৌমাছি বাসা বাঁধছে
হৃদয়
আমার কাছে বন্দুক নেই
তীর নেই বল্লম নেই
একটা কুড়ুলও নেই, শুধু
আমি আছি আমার হৃদয় নিয়ে
বাঘ এলে বলব: একটু দাঁড়াও
হৃদয়কে আরও প্রশস্ত করি, বসতে দেব
ধান ও জলের ধ্বনি
তুমি চিনতে চাও, পুরনো খড়ে লেগে থাকা জল
আমি খুঁজি, পুরনো খড়ের মধ্যে একটি ধান
মহাপ্রলয়ের পরেও, ধান ও জলের ধ্বনি আমাদের আশ্রয়।
এই সময়
মা-কালীর মতো একটা সময়
আমাদের বুকে পা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
’এই সময়’ লজ্জায় জিভ কাটেনি, কেনো তার লজ্জা নেই
আমাদেরও লজ্জা নেই, আমরা বুক পেতে দিয়েছি
পায়ের চাপে নিঃশ্বাস চুপ হয়ে গেলেও ভয় কচ্ছে না
ভয় নেই বলেই ঘাম নেই, কারণ, আমাদের রক্ত নেই
রামরক্ত নেই বলে বলতেই পারি আমাদের হাড় নেই
মেরুদণ্ড নেই
আমরা চিৎ হয়ে শুয়ে থাকতেই ভালোবাসি
ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকতে ভালোবাসি
ঘোড়া
ঘরের পথ হারিয়ে ঘোড়া এসে দাঁড়ালো আমার কাছে
কী বলবো তাকে কোন দিকে ঘর। বললাম, এখন তো দাঁড়াও
জলপানি করো, দুটো কথা হোক, তারপর দুজনেই খুঁজতে যাবো ঘর
চারদিকেই ঘর, সর্বত্র বসতি, ঘোড়া নিজেও চিনতে পারে না, কোন পথে
কোন ঘরে ফেলে এসেছে তার পায়ের দাগ
একাকী
ঘুম আসছে না বললেই, মোরগের ডাক
শুনতে পাই । কোথায় থাকে,
মাথার ভেতরে খুঁজতে-খুঁজতে বুকের ভেতরে খুঁজি
দড়ি-বালতি নিয়ে ছুটে আসে মেজ বৌদি
আমার বুকের থেকেই জল তুলবে ।
জল কি সহজে পাওয়া যায়, আমি হাসতে-হাসতে
ফেরত পাঠাই ঘর
ঝোপ-ঝাড়েও নেই মুরগির পালক
কার যেন চোখের বেণু বাঁশপাতায় চিকচিক করে
কে এসেছিল কারা এসেছিল,
দিন না রাত্রি ছিল,
বাঁশবন উপড়ে দিলেও সন্ধান পাবো না
তরুণ শুধু সাইকেলের বেল বাজাচ্ছে ।
শান্ত, একাকী
ভিখিরি
ভিক্ষে দিলেই ভিক্ষে পাই
যা চাইবো জল মাটি আগুন
যা চাইবো আলো হাওয়া, কল্যাণ
তোকে পাবো বলে
দশ গাঁয়ে যাওয়া, যদি
আমার ঝুলিতে পড়ে এক মুঠো তুই
No comments:
Post a Comment