জলজ
মুলুনের মত গভীরে থাকো
কাদা ও জলে, মৃত্তিকা রস সেঁচে এনে
ফুল ফোটানোর দায়।
পদ্মপাতায় জলের আলিঙ্গন
আজকে না হলে কালকে ভাবি
এ পুকুর আঁখি বাঁধ নাম
জলে নিমজ্জিত জলেরই অঙ্গ
তার
কাঁপন অথবা তরঙ্গ যে নামেই ডাক
চৈতন্য রূপে আসলে রাধারই প্রকাশ।
চিঠি
লণ্ঠনের সামনে বসে
চিঠি লেখা
ফড়িং এসেছিল গংগা ফড়িং
লণ্ঠনের আলোয় পাক খেল অনেক ।
তুমি তো কেবলই উত্তরহীন
আমাকে প্রাপক হতে দিলে না কখনো।
নির্জন থেকে নির্জনতর হতে হতে
একটি বিন্দুতে মেলে অবশিষ্ট রাত
যেখানে তুমিও নেই, আমিও না
শুধু সকাল হবার বাসনা লেগে আছে।
চিঠির তো উড়ুক্কু জীবন
বাংলা ভাষা
চরাচর থেকে তুলে নিচ্ছ ফুল
শস্যদানা কিংবা এয়োতি তরমুজ।
কাঁটা ঝোপের মাথায় মাথায়
নরম হলদে ফুল,
ঈশারা চিহ্নের মত
বাংলা ভাষা ফুটে আছে আমাদের।
অড়তল বড়তল হয়ে তার পরিক্রমণ
অবনত ধান গাছটির মতোই
শস্যে, শব্দে তার বিস্তার
জুড়ি ভোগের ধোঁয়া উঠছে থানের উনুনে
লঙ্কাকাণ্ড
মশলার কৌটোয় পড়ে থাকা
আদি গোলমরিচ, সমস্ত কালো মেখে আছে।
ঝাঁঝির জল স্পর্শে জেগে আছে
লঙ্কা ফুলের যত্ন
আহা ঝাল। সমৃদ্ধ জিভে ছুঁয়ে থাকো
কটু বাক্যগুলি।
সাঁতলানোর আগে ও পরে
গৃহস্থ রমণী তার সবটুকু জানে
লাল, কালো অথবা সবুজ শরীরে
লঙ্কাকাণ্ডের মতোই দাউদাউ
চুয়াকাটা
মাঝদুপুরে এসে হঠাৎ
অন্তঃসলিলা হয়ে উঠল হাড়াই নদীটি
নদীর একটু ফারাকে
লাউ কুমড়ার ক্ষেত, কুঁদুরি লতা।
ইঁটভাটার কুলি ও কামিনেরা
গামছা বাঁধা টিফিন বাটি খোলে
কাগজে মোড়া নুন ও ঝালে
চাগাড় দেয় ক্ষিদে পাওয়া রোদ।
আঁচলে বাঁধা চাবি তার
হাঁড়ি মাথায় জল নিতে আসে
বালি খুঁড়ে চুয়াকাটা জল
জলে ভাসে নোলক কাঁপা মুখ
অলক্ষ্যে মেঘ জমেছে নদীধারের প্রাচীন দেউলে।
No comments:
Post a Comment