বৈখরী
তোমার কোন শব্দকে আমি ভালোবাসা শেখাই না। শুধু রক্তহীন ঈশ্বরের বিজ্ঞাপন থেকে
বের করে আনি আঙুলের ছাপ। যতিচিহ্নের পরিবর্তে চিৎকার করে ওঠে একটি শিশুর অন্ধকার। একটা
শূন্যতার ঘোর ঘুমিয়ে পড়ে শব্দের নীচে
আবার ঘুম-ভাঙা ঈশ্বরের ডাক থেকে অন্ধ একটি কাক নেমে আসে আমাদের সম্পর্কের
এঁটোয়। গল্পের শিশু আন্দাজে ঢিল ছোঁড়ে মৃত শব্দের দিকে। শব্দের পিছন থেকে আহত
বার্গম্যান বেরিয়ে আসেন
শূন্যতার ঘোর উঠে দাঁড়িয়ে মুখোশ খুলে ফেলে। খাদ্যের প্রয়োজনে আমরা কথা শুরু
করি। শিশুকে ফেলে আসি পাগলামির দিকে।
মধ্যমা
ভাল থাকা একটা শব্দ পোশাক বদলে নেয় তোমার অন্ধকারে। তিস্তা-রাইন-কঙ্গো – কোথাও
তোমার বোবা কান্না পা উঁচু করে শব্দ খোঁজে। নীচু ঝিনুক নিওলিথ বিশ্বাসে হেঁটে আসে
তোমার প্রতিরূপে। শব্দের ফেনা আয়লান কুর্দির মতো ভাসছে
শব্দের কাঁটাতারের ওপাশে খেলনা ঈশ্বর, এপাশে মৃত শিশু। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে
আমাদের রক্ত ফুরিয়ে আসে। কমেডিয়ান ঈশ্বর জোর করে খাদ্য ভাগ করেন আমাদের ছায়ার
সাথে। সেই ঘোর থেকে উড়তে শুরু করে বিকেলের পাখির দল
পাখির ডাক থেকে
আমরা ক্রমাগত আলাদা হচ্ছি। আকাশের টিপছাপে চেপে ধরছি নড়বড়ে আঙুলের ভাগ্য। অজন্তায়
শিশু রাহুলের আঙুলেও এতটাই লুকোচুরি ছিল।
পরা
পাখির শর্তের ভিতর আমরা চুরি হয়ে গেলাম অষ্টধাতুর ঈশ্বরের মতো। ধাতু গলিয়ে
একের পর এক খেলনায় লুকিয়ে পড়ল মৃত শিশু। শব্দোত্তর একটা ঘরের সামনে ধাক্কা লাগছে
আমাদের শব্দরূপে
শব্দরূপী এক যক্ষ প্রশ্ন করছে আমাদের। জীবাশ্ম ভেঙে ভেঙে উত্তর লিখছি আমরা। উত্তর
মিলছে না। শিশুসুলভ এক বোবা কান্না থেকে ক্ষীণ হয়ে আসছে পরীক্ষাকক্ষের ঘন্টাধ্বনি।
মিথ্যে কথার মতো মিশে যাচ্ছে স্বপ্নের ওপিঠ
খেলার নিয়ম আমরা পাল্টাতে পারছি না। নতুন শিল্পী এসে বর্ণিকাভঙ্গ থেকে দত্তক
নিয়ে নিচ্ছেন শিশুটিকে। লাল অন্ধকারের কাঁটা বিঁধে যাচ্ছে তালাত মাহমুদের গজলের
ওপরে।
পশ্যন্তি
সাহসটুকুর বাইরে বেরিয়ে আসি আমরা। অবতল আয়নার ভিতর শিশুর মতো গল্প শুনতে চাইছে
রাস্তা। শব্দের চোখ থেকে সরে যাচ্ছে আমাদের অভিনয়। অভিনয় থেকে সরে যাচ্ছে ঈশ্বরের
নাস্তিক রঙ। রঙ থেকে সরে যাচ্ছে তোমার মাতৃতান্ত্রিক নাভি
ভালোবাসার রঙের ভেতর ধাঁধা ঢুকে যায়। তার মাথা কাটলে চমক, পেট কাটলে শূন্যতা।
দূর থেকে নদীর কান্না ঢুকে পড়ে শিশুর ফিডিং বোতলে। স্পর্শবর্ণে দাঁড়িয়ে থাকা
মৃত্যু একটানা শুনে চলেছে পঙ্কজ মল্লিকের গান
শব্দের জটিলতার পাশেই আমাদের এই পিকনিক স্পট। শিকারী পাখিরা ক্রমাগত উড়ে আসছে
আমাদের ধাতুরূপের দিকে।
শূন্য
ঢিলটা ছুঁড়ল কে?
তরঙ্গের প্রতিবিম্ব ফুটে উঠছে আমাদের ক্যামেরায়। শব্দের ভেতর নতুন একটা শব্দের
শূন্যতা। অর্থহীন শিশু ম্যাজিক দেখাতে শুরু করে খিদের ভেতর। আমরা নতুন এক খিদের
ঘরে ঢুকে পড়ি
খুব কাছেই তখন
পরমান্নের গন্ধ। সুগন্ধী চাল ও মায়াদুগ্ধ থেকে আমাদের জন্মান্তর গাঢ় হচ্ছে।
মিষ্টতা পরীক্ষা করতে গিয়ে আমরা হারিয়ে যাচ্ছি
লোভী পিঁপড়েরা
ততক্ষণে ঢুকে পড়েছে শব্দের ভিতর।
No comments:
Post a Comment