খুঁজুন। ক্লিক করুন। টাইপ করুন।

8.7.18

গুচ্ছ কবিতা অমিতাভ মুখোপাধ্যায়







গুহা
ভাবলেই রক্তপাত হবে, তাই সেঁধিয়ে যাওয়া ভালো
নিজের মধ্যে এক অস্পষ্ট গুহা, লম্ফ জ্বলছে হালকা স্মৃতির মতন
একমনে কারা কবিতা পড়ছে, ওই চেয়ারের শূন্যস্থানে তাকাও
অবসর ওখানে কাকে ফেলে ফেলে চলে গেছে
এই নিশ্চুপে আধখোলা জানলার কোনো প্রাসঙ্গিকতা নেই
প্রতিটি শব্দের কোনো নির্দিষ্ট অর্থ নেই
যতক্ষণ ক্ষত চেটে চেটে চেয়ারের নিচে টানা বসে থাকতে পারে
                                                বিমর্ষ কুকুর
ততটা সময় ছিঁড়ে রাখা ভালো নোটবুক থেকে………

শীত ও স্বপ্ন
শীতের স্বপ্নের ভিতর কম্বল মুড়ি দিলাম
সব সংলাপের মধ্যে গুঁজে দিলাম মুঠো মুঠো ঝুরো বরফ
টানা পাইনজঙ্গলের ভিতর কী ভাবে তির তির করে কেঁপে উঠছে রোদ
টুকে রাখলাম তার ভূমিকা
বসতির উপর  ঝুপ করে কেমন অন্ধকার নেমে আসবে, এই কথা ভাবতে ভাবতে
বাক্স থেকে একটা বিবর্ণ সোয়েটার বের করে অপলক তাকাতেই
শুকনো দুখানা চোখে ঘাম নাকি মেঘ জমতে থাকলো !!!  




নতুন বাঁশিওলা

ভাল্লাগেনা কবিতা টবিতা, আঁকিবুঁকি, ডাকের সাজ,
এমনকি পোশাক আশাক ছাড়া শরীরের ভাষা
প্রথম কান্নার স্বর যেদিন শুনেছিলাম, পরদিন
 থেকে
 কেবল বাঁশি বাজছে মন্থর.....
অকাজের মাঝে কোনো দোলা নেই, একটি স্থির
                     প্রতিবিম্ব আকাশের বুকে
যেন ঠায় দাঁড়িয়ে আছে, মেপে নিচ্ছে
আমাদের চাহিদা ও কাতরতা, মুছে দিচ্ছে
 
                         ধেবড়ে যাওয়া রং
আর ঝাঁকুনি দিলেই
 
সটান নেমে এসে শুয়ে পড়ছে সমস্ত সম্ভাবনার
 উপর......







শব্দযাপন     
শব্দগুলোকে পাড়তে চাইছি, পাকা ফলের মতো যারা ঝুলে আছে বসবাসে
যারা একবার কখনো দোসর হয়েছিল এই ছায়াঘনায়মান অলৌকিকে......
এখন নির্জন সব, বাতিঘর থেকে দূরে রাতের চাউনি লক্ষ্য করি,
কটাক্ষের মতো কিছু সুর বিঁধে আছে তার গলকম্বলে,
ধূসর প্রেতের চোখে সুর্মা পরানো গভীরতা......
ডুব দেবার আগে গামছা, পুঁটুলিগুলো সযত্নে গচ্ছিত রাখি পাড়ে,
তেল মাখামাখি করি আমি ও কিশোরী রাত....


নিজেকে ছোয়াঁর আগে সেসব মায়াবী শব্দের শরীরে আঙুল বোলাই......




চরিত্রহীন
রাগরূপ চিনতে পারছিনা, অন্ধকার চিনতে পারছিনা,
আর আলো !!  শুনেছি সে নাকি ক্ষমতাবান, উপলব্ধির কাছে আজানুলম্বিত
ঘাঁটি গেড়ে বসে আছে বিনীতার পাশের ফ্ল্যাটে

তবু বৌদিরা আমায় ডাকছেনা, করুণায়,নির্জনতায়
                         কিংবা নিজস্ব অন্ধকারে
ফুরিয়ে যাচ্ছে মাস, বছর, বসন্তের খারাপ ধারণাগুলি
মনে রাখতে পারছিনা দেবতাদের নাম
ভেঙে যাচ্ছে শোক ও শুশ্রূষার গঠন
ছায়াপথের পাশে যে গাড়ি দাঁড়িয়ে
তার উইন্ডস্ক্রিনে লিখে রাখছি কৌশল
--- এই খেলা তোমার আমার কারো নয়
একটা স্পষ্ট বিবৃতি থেকে অসম্ভব দূরে ছায়া ঘনাইছে
                                      বনে, মনে



অনুশীলন
তুমি যাকে বহন করছো, সমস্তই তোমার পরিশীলিত যাপনের ফল
যাকে বেঁধে রেখেছো স্বপ্নে, তার আগল খুলে যাচ্ছে বিবর্ণ অধিকারে
ভিক্ষের হাত পেতে দাঁড়িয়ে আছে  যে ছেলেটা
                                  তোমার গাড়ির জানলায়
তার সমস্ত আর্তি ও ছল তুমি বহন করছো সারাদিন
শেষ যাকে ভালোবেসেছিলে, তার অনুরাগ চারিয়ে যাচ্ছে
                            তোমার প্রতিটা সমীক্ষায়
কখনো ধিকিধিকি জ্বলে উঠছে লোভ
সমস্ত সংজ্ঞার ভিতর ঝলসে উঠছে অচেনা অভিমান
আউট্রাম ঘাটে মুখোশ খুলতে বাধা দিচ্ছে ঝালমুড়িওলা
অথচব অ্যাতো ভার স্পর্ধার মতো তোমায় বয়ে নিয়ে যাচ্ছে সুরুচির দিকে…..



No comments:

Post a Comment

একঝলকে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"আমি বিদ্রোহী নহি, বীর নহি, বোধ করি নির্বোধও নহি। উদ্যত রাজদণ্ডপাতের দ্বারা দলিত হইয়া অকস্মাৎ অপঘাতমৃত্যুর ইচ্ছাও আমার নাই। ক...