খুঁজুন। ক্লিক করুন। টাইপ করুন।

8.7.18

একগুচ্ছ কবিতা শুভম চক্রবর্তী






চর্যাপদ

সংকেতভাষ্যের দল
               যেটুকু জানায়
শুধু সেটুকুই জেনে নিতে পারি
সেখানে আঁতুড় ছিল
ঝড় ও বাদলঘেরা কোনো মাঝরাতে
প্রসবকাতর ডোম রমণীর চোখ থেকে
                                  ঝরেছিল জল
অনিদ্রা কার্পাসতুলো
                      মুখে মুখে কবিতাসম্বল !
যে যার নিজের মতো
                অপার্থিব সেতু গড়ে নেয়
কায়ার প্রপঞ্চমায়া
রূপা নয়,  সোনায় ভরানো
প্রথম দশক তুমি এ কথার কতটুকু জানো
তাদেরও কবিতা ছিল
উঁচু পাহাড়ের কোল ঘেঁষে
উড়ে যেত নিশিরাতে
       কুহক কুহক বাস্তবতা
মাঝি ও মাল্লা ছিল,  ডোম ও শবর
        আর কামনার কথা
সন্ধ্যাভাষার জলে
        মাঝরাতে হাবুডুবু খেত
সমগ্র শরীর তার
        নিপুণ কবিতা
মাথায় ময়ূরপুচ্ছ গলায় গুঞ্জার মালা কানে কুণ্ডল
পরকীয়া ছিল তার
ভীষণ প্রবল ছিল কবিতাসম্বল !
প্রথম দশক তুমি
সমস্ত হত্যার পরে
ঘামে ভিজে গৃহত্যাগী হবে
তোমাকে আদর করে বুকে নেবে ঠোঁটে নেবে
                                           প্রেমিকা তোমার
দুপায়ে নূপুরধ্বনি দুকানে কুণ্ডল
                       গলে গুঞ্জার হার
এবং শিকার হবে
মদ ও পশুর মাংসে গড়িয়েছে জল
তা হোক তা হোক, তবু...
কবিতা সন্ধ্যের ভাষা...কবিতাসম্বল....
কবিতা প্রমত্ত রাত
        গানে... গানে...বেদনামধুর
কবিতা গভীর রাতে
অচেনা আড়াল খোঁজে
আর্ত নারীপুরুষের গোঙানির সুর
কবিতা অনন্ত আয়ু
            অনন্তের দিকে হেঁটে যায়...
ঈশ্বর অদৃশ্য তাই
             দৃশ্যমান কবিতা সহায় !
দারুণ উষ্ণতা আর হিমধরা শীতরাতে
                                         রমণী ডালিম
তেঁতুল -কঙ্কুচিনা কামড়ে আপেলমুদ্রা
                                   মাথা ঝিমঝিম
এসবও কবিতা সোনা
প্রথম দশক তুমি
তোমার নৌকাটি শুধু সোনায় ভরাও
এক বাঁও দু বাঁও
বিশ বিশ বাঁও
সমস্ত পেরিয়ে শেষে
অনন্ত লালনস্রোতে
ভেসে যাবে প্রাণে
প্রথম দশক তুমি
চর্যাপদের কোনো প্রাচীন আহ্বানে
তোমারও ভেতরে বাজে
কুয়াশাজড়ানো মন,  মহুয়ার গান
সে গানের সুরে সুরে
হাজার বছর ধরে
চোখে আসে জল
কবিতা অনন্তে যাবে...অর্বুদ অর্বুদ বর্ষ...
সমস্ত জগৎগৃহ কবিতাসম্বল !


কবিতা টবিতা লিখে

কবিতা টবিতা লিখে কোনো কিছু হয়না প্রেয়সী
রাতের শহর দ্যাখো আঙুলে আঙুল মেখে ঘোরে
উদ্দাম বাসের সিটে দুটি দেহ যেন তরুলতা
কসমিক ডুবোপানা আড়ালে তোমাকে দেবে দুয়ো
শহরে আগুন জ্বলে ঘষা কাচে যে ছবি দেখেছি
সে ছবি ভোলার নয়,সে ছবি বলার মতো কাকে...
কুড়িয়ে ছড়িয়ে স্বপ্নে দাউদাউ ডালপালা পোড়ে
শতাব্দী পার্কের বেঞ্চ আগুনের ডাকনাম শেখে
দু-একটা হার্টবিট কানাগলি ধরে বাড়ি ফেরে
যেটুকু উত্তাপ ছিল সারাদেহে বিলি করে পথে
কাগজওয়ালার হাতে গুজে দেয় চেনা রৌদ্রলিপি
তবুও চেষ্টা করি নিভে যেতে,নেভাই নিয়তি
কবিতা টবিতা লিখে কোনো কিছু হয়না প্রেয়সী !
                    
                                
সেতু

তুমিও সহজ বড় বেশি
আমিও সহজ গতায়াতে
তোমার সহজ মুখচ্ছবি
 ভেঙে ভেঙে তুলে নিচ্ছি হাতে


ভেতরে নিসর্গচিত্র
বাইরেই এলোমেলো মেঘ
সমস্ত আপোষ আজ শিল্প
আর বেদনা আবেগ !


1 comment:

একঝলকে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"আমি বিদ্রোহী নহি, বীর নহি, বোধ করি নির্বোধও নহি। উদ্যত রাজদণ্ডপাতের দ্বারা দলিত হইয়া অকস্মাৎ অপঘাতমৃত্যুর ইচ্ছাও আমার নাই। ক...